রবিবার, ১২ অক্টোবর ২০২৫, ০৮:৩৯ অপরাহ্ন
শিরোনামঃ
রাজশাহীতে দুটি ট্রাকের ১০ লক্ষ টাকার যন্ত্রাংশ চুরির অভিযোগ নীলফামারীতে ৫ দফা দাবিতে জামায়াতের স্মারকলিপি চাঁদাবাজ ও সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স ঘোষণা আমিনুল হকের ঢাকা-১৪ আসনে ধানের শীষে ভোট চেয়ে যুবদল নেতা সাজ্জাদুল মিরাজের বিশাল মিছিল ঝিনাইদহে সেনাবাহিনীর যৌথ অভিযান অস্ত্র উদ্ধার আটক ২ জন ঝিনাইদহের মহেশপুরে বিজিবির অভিযানে ভারতীয় মদ উদ্ধার ও পাঁচ বাংলাদেশি আটক করতোয়া নদীতে নিখোঁজের৩২ ঘন্টা পর হৃদয়ের লাশ উদ্ধারের চুয়াডাঙ্গায় বাসচাপায় মোটরসাইকেল আরোহী নি*হত রাজশাহীতে খাদ্য বিভাগের গাফিলতি : ডিসি ফুড ও আরসি ফুডের ছত্রছায়ায় লুটপাট ঝিনাইদহে পিআরসহ ৫ দফা দাবিতে জামায়াতের র‌্যালি ও স্মারকলিপি পেশ

সাতক্ষীরায় বিএসটিআই অনুমোদনহীন ড্রিংকিং ওয়াটার কারখানার বেপরোয়া বাণিজ্য

মোঃ আজগার আলী, স্টাফ রিপোর্টার, সাতক্ষীরা

সাতক্ষীরা জেলায় “ড্রিংকিং ওয়াটার” নামে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান বেআইনিভাবে গজিয়ে উঠছে। অধিকাংশ ক্ষেত্রেই এই পানির গুণগত মান অত্যন্ত নিম্নমানের এবং স্বাস্থ্য ঝুঁকিপূর্ণ।
শহরজুড়ে ব্যাঙের ছাতার মতো গড়ে ওঠা এসব প্রতিষ্ঠানের অধিকাংশের নেই কোনো ট্রেড লাইসেন্স, বিএসটিআই অনুমোদন বা স্বাস্থ্য সনদ। বহু প্রতিষ্ঠানে সাইনবোর্ড নেই, আবার অনেক পানির জারের গায়ে উৎপাদনের তারিখ ও মেয়াদোত্তীর্ণের তারিখও উল্লেখ করা হয় না। এভাবে জনস্বাস্থ্যের সঙ্গে সরাসরি প্রতারণা করা হচ্ছে প্রতিদিন। শহরের প্রায় প্রতিটি পাড়া-মহল্লা ও বাজারে এই পানির জার পাওয়া যাচ্ছে, যার অধিকাংশই নিম্নমানের এবং বিএসটিআই অনুমোদনহীন। ৫ টাকা, ১০ টাকা কিংবা ২০ টাকায় বিক্রি হওয়া এসব ২০ লিটারের পানির জারগুলো ব্যবহৃত হচ্ছে স্কুল-কলেজ, অফিস-আদালত, রেস্টুরেন্ট এমনকি নামকরা ক্লিনিকেও।
বিশেষ করে শহরের বিভিন্ন চায়ের দোকানে এসব নিম্নমানের পানির জারই বেশি ব্যবহৃত হচ্ছে। চায়ের দোকানগুলোতে দিনে হাজারো মানুষ পানি পান করছে অথচ তারা জানতেই পারছে না কোন উৎস থেকে পানি আসছে বা তা নিরাপদ কি না।
অনুসন্ধানে জানা যায়, সাতক্ষীরায় বিএসটিআই অনুমোদনপ্রাপ্ত ড্রিংকিং ওয়াটার প্রতিষ্ঠানের সংখ্যা মাত্র পাঁচটি। এগুলো হলো:
১. রিমঝিম ড্রিংকিং ওয়াটার
২. তাহা ড্রিংকিং ওয়াটার
৩. হক ড্রিংকিং ওয়াটার
৪. ঋশিল্পী ড্রিংকিং ওয়াটার
৫. উত্তোরণ ড্রিংকিং ওয়াটার
এই পাঁচটি প্রতিষ্ঠান ছাড়া বাকি সব পানি উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান অনুমোদনহীনভাবে বাজারজাত করছে নিম্নমানের পানি। এর মধ্যে “অনির্বাণ ড্রিংকিং ওয়াটার” নামের একটি প্রতিষ্ঠান বিএসটিআই’র অনুমোদন না থাকা সত্ত্বেও বোতলের গায়ে অবৈধভাবে বিএসটিআই লোগো ব্যবহার করছে, যা আইনে দণ্ডনীয় অপরাধ হিসেবে বিবেচিত।
জেলার সাধারণ মানুষ, বিশেষ করে খুচরা দোকানি এবং নিম্ন আয়ের মানুষজন এই সস্তা ড্রিংকিং ওয়াটার ব্যবহার করছেন প্রতিনিয়ত। কিন্তু তারা জানেন না, এই পানির মাধ্যমে তারা নানা ধরনের পানিবাহিত রোগের ঝুঁকিতে পড়ছেন—যেমন জন্ডিস, টাইফয়েড, পেটের পীড়া এবং ত্বকের রোগ।
জেলা প্রশাসন ও স্বাস্থ্য বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, খুব শিগগিরই এসব অনুমোদনহীন পানির কারখানার বিরুদ্ধে অভিযান পরিচালনা করা হবে। এ ধরনের অনিয়ম বন্ধ করতে না পারলে জনস্বাস্থ্য বড় ধরণের সংকটে পড়বে বলে মত দিয়েছেন বিশিষ্ট চিকিৎসক ও সচেতন মহল।
সাতক্ষীরার নাগরিকরা চান, জেলা প্রশাসন, বিএসটিআই ও স্বাস্থ্য বিভাগ সমন্বিতভাবে একটি শক্তিশালী তদারকি ব্যবস্থা গড়ে তুলুক এবং অবৈধ পানির কারখানাগুলোর বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করুক। একই সঙ্গে সাধারণ মানুষকে সচেতন করতে গণমাধ্যমে প্রচার ও সচেতনতামূলক কার্যক্রম পরিচালনার দাবি জানান তারা।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *


ফেসবুকে আমরা