সোমবার, ১৩ অক্টোবর ২০২৫, ০২:০৯ পূর্বাহ্ন
শিরোনামঃ
মিরপুর রিপোর্টার্স ক্লাবের বর্ষপূর্তি উদযাপনে সাংবাদিক নেতা খান সেলিম রহমানকে বিশেষ সম্মাননা প্রদান পল্লবী থানা এলাকায় টানা অভিযানে মাদক সাম্রাজ্যের পতন *লক্ষ্মীপুরে রুসুল গঞ্জ বহুমুখী উচ্চবিদ্যালয়ের শিক্ষার মান উন্নয়নে ব্যাপক উদ্যোগ* রাজশাহীতে দুটি ট্রাকের ১০ লক্ষ টাকার যন্ত্রাংশ চুরির অভিযোগ নীলফামারীতে ৫ দফা দাবিতে জামায়াতের স্মারকলিপি চাঁদাবাজ ও সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স ঘোষণা আমিনুল হকের ঢাকা-১৪ আসনে ধানের শীষে ভোট চেয়ে যুবদল নেতা সাজ্জাদুল মিরাজের বিশাল মিছিল ঝিনাইদহে সেনাবাহিনীর যৌথ অভিযান অস্ত্র উদ্ধার আটক ২ জন ঝিনাইদহের মহেশপুরে বিজিবির অভিযানে ভারতীয় মদ উদ্ধার ও পাঁচ বাংলাদেশি আটক করতোয়া নদীতে নিখোঁজের৩২ ঘন্টা পর হৃদয়ের লাশ উদ্ধারের

সাতক্ষীরা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ডাক্তার ও ওয়ার্ডবয়ের কাছে রোগীরা জিম্মি

মোঃ আজগার আলী, স্টাফ রিপোর্টার সাতক্ষীরা:

সাতক্ষীরা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাসেবা নিতে এসে দুর্নীতি, প্রতারণা ও চাঁদাবাজির শিকার হচ্ছেন সাধারণ রোগীরা। অভিযোগ উঠেছে—একটি সংঘবদ্ধ চক্র দীর্ঘদিন ধরে হাসপাতালের ওষুধ ও চিকিৎসা ব্যবস্থাকে নিজেদের স্বার্থে ব্যবহার করে চলেছে। এর পেছনে রয়েছে ওয়ার্ডবয়, দালাল এবং কিছু অসাধু চিকিৎসকের যৌথ সিন্ডিকেট।

সরকারি হাসপাতালের ওষুধ বাইরে বিক্রি হচ্ছে এবং এতে জড়িত রয়েছে একটি বড় চক্র। অনুসন্ধানে জানা যায়, এই চক্রের মূল হোতা হাসপাতালের ওয়ার্ডবয় শাহীন হোসেন। জানা যায়, তিনি আওয়ামী লীগের সময় আওয়ামী লীগ করতেন, আর বর্তমানে জামায়াত-শিবিরের ছত্রছায়ায় থেকে নিজের প্রভাব বিস্তার করে রোগীদের কাছ থেকে ওষুধ সংগ্রহ করে সেগুলো বাইরে বিক্রি করেন। এছাড়া, ওয়ার্ডবয় শাহীন তার দালাল চক্রের মাধ্যমে রোগীদের সাতক্ষীরা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল থেকে স্থানান্তর করে আনোয়ারা ক্লিনিকে পাঠান এবং সেখান থেকেও মোটা অঙ্কের মুনাফা ঘুষ আকারে আদায় করেন।

সাংবাদিক ইলিয়াস হোসেন নামে এক ভুক্তভোগী জানান, “আমার পাইলসের চিকিৎসার জন্য মেডিকেলের ২৩৫ নম্বর কক্ষে যাই। সেখানে ডাক্তারের পরামর্শে পাশের ফার্মেসি থেকে একটি বড় জেল টিউব ও চারটি গ্লোভসসহ ২৫০ টাকার ওষুধ কিনে আনি। কিন্তু লক্ষ্য করি, একই ধরনের স্লিপ অনেক রোগীকেই দেওয়া হচ্ছে এবং তাতে অপ্রয়োজনীয় ও অতিরিক্ত ওষুধের নাম লেখা থাকে।” তিনি অভিযোগ করেন, এসব ওষুধ অনেক সময় ব্যবহারের প্রয়োজন হয় না। অথচ এসব ওষুধ বাইরে থেকে কিনে আনতে বাধ্য করা হয়।

তিনি আরও বলেন, “ওষুধগুলো ডাক্তার বা ওয়ার্ডবয় শাহীন হোসেনের কাছে জমা দেওয়া হয়, যা পরে বিক্রি করে দেওয়া হয় বলে মনে হচ্ছে। শাহীনকে জিজ্ঞেস করলে তিনি স্বীকার করেন, ‘আমি মাঝে মাঝে ওষুধ নিয়ে থাকি।’ তবে তিনি অন্য কাউকে জড়ানোর কথা অস্বীকার করেন।”

আরও অভিযোগ রয়েছে, ডাক্তার সুশান্ত কুমার মূলত রোগী দেখেন, কিন্তু প্রেসক্রিপশনে সিল মারেন ডাক্তার সুজিত রায়, যিনি বর্তমানে মেডিকেলের রেজিস্ট্রার ও সার্জারি বিভাগের বিভাগীয় প্রধান ডা. মো. শরিফুল ইসলামের তত্ত্বাবধানে কর্মরত। এ বিষয়ে সংশ্লিষ্ট একাধিক কর্মকর্তার বক্তব্যের মোবাইল রেকর্ড সংরক্ষিত আছে বলে জানা গেছে।

রোগীরা বলছেন, সরকারি হাসপাতাল হয়েও এখানে সঠিকভাবে ওষুধ সরবরাহ ও চিকিৎসা সেবা দেওয়া হচ্ছে না। উপরন্তু অতিরিক্ত ও অপ্রয়োজনীয় ওষুধ লিখে দিয়ে রোগীদের কাছ থেকে আর্থিকভাবে লাভবান হচ্ছে একটি চক্র।

এ বিষয়ে সাতক্ষীরা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের প্রশাসনিক কর্মকর্তার দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে তিনি বলেন, “এই অভিযোগ অত্যন্ত গুরুতর। আমরা বিষয়টি তদন্ত করে দেখব এবং সত্যতা পেলে দোষীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”

জনস্বাস্থ্য অধিকার নিশ্চিত করতে দ্রুত এই চক্রের বিরুদ্ধে যথাযথ পদক্ষেপ নেওয়ার দাবি জানিয়েছেন ভুক্তভোগী রোগী ও সচেতন নাগরিক সমাজ।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *


ফেসবুকে আমরা