রবিবার, ২১ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ০১:০২ পূর্বাহ্ন
শিরোনামঃ
খুনের মামলার দুই আসামি গ্রেফতার রাজশাহী কেন্দ্রীয় কারাগারের কারা হাসপাতাল এখন রোল মডেল বরগুনা-১ আসনে নির্বাচনী প্রচার প্রচারণায় ব্যাস্ত এ্যাড. মোঃ রেজবুল কবির…! নবীনগরে পুকুর থেকে কলেজ ছাত্রীর লাশ উদ্বার আগামীতে শহীদ জিয়ার দল বিএনপিই সরকার গঠন করবে – জনসভায় এস এ সিদ্দিক সাজু শারদীয় দুর্গাপূজা উপলক্ষে গোপালপুরে আইন শৃঙ্খলা বিষয়ক মত বিনিময় সভা অনুষ্ঠিত গলাচিপায় নদী ভাঙনে সড়ক বিলীন হওয়ার শঙ্কায় মানববন্ধন বিজিএমইএ ও স্ট্যানলি স্টেলার বৈঠক: টেকসই উন্নয়ন ও সামাজিক দায়বদ্ধতায় অঙ্গীকার রাঙ্গাবালীতে দশ দিনব্যাপী আনসার-বিডিপি প্রশিক্ষণ চলছে বগুড়ায় মাদক ও আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে এএসপির সঙ্গে জাতীয় মানবাধিকার অ্যাসোসিয়েশনের আলোচনা

থানায় স্বামীকে খাবার দিতে গিয়ে স্ত্রী গ্রেফতার, বিতর্কে ওসি হাফিজুল ইসলাম

মোঃ বাবুল স্টাফ রিপোর্টার

ময়মনসিংহের হালুয়াঘাটে মঙ্গলবার সকালে ঘটে গেল এক হৃদয়বিদারক দৃশ্য। আগের দিন জমি-সংক্রান্ত মামলায় গ্রেফতার হয়েছিলেন আব্দুর রশিদ (৫৫)। মঙ্গলবার সকালে স্ত্রী জাহানারা বেগম স্বামীর জন্য টিফিন বক্সে ভাত-তরকারি নিয়ে থানা ফটকে এসে দাঁড়ান। কণ্ঠ রুদ্ধ হয়ে যায় তার, স্বামী না খেয়ে আছে, শুধু খাবারটা দিয়ে আসতে চাই।

কিন্তু মানবিকতার ন্যূনতম মূল্য না দিয়েই পুলিশ তাকে ধাক্কা দিয়ে থানার ভেতরে টেনে নেয়। খাবারের টিফিন হাতে নিয়েই গ্রেফতার হলেন নিরীহ এই নারী। এ সময় উপস্থিত অনেকেই কান্নায় ভেঙে পড়েন।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, এই মামলার বাদি শরীফা খাতুন কুখ্যাত মাদক ব্যবসায়ী। সোমবার সন্ধ্যায় পুলিশ তার সাথে নিয়ে তদন্তে গেলে কথাকাটাকাটির এক পর্যায়ে শরীফা নিজেই আব্দুর রশিদকে চড়-থাপ্পর দেন। রশিদ প্রতিবাদ করলে অনিচ্ছাকৃতভাবে এক পুলিশ সদস্যের গায়ে আঁচড় লাগে। মুহূর্তেই সমাধান হয়ে গেলেও পরে পুলিশ হঠাৎ করেই তাকে গ্রেফতার করে।

স্থানীয় কৃষক দেলোয়ার হোসেন বলেন,
শরীফা মাদক ব্যবসা করে আমাদের এলাকাকে নষ্ট করছে। অথচ তার কথায় নেচে পুলিশ নিরীহ পরিবারকে জেলে পাঠাল! এটা কোন ন্যায়বিচার?

প্রত্যক্ষদর্শী এক বৃদ্ধ আবেগভরা কণ্ঠে বলেন,
আজ যদি স্বামীর জন্য খাবার নিয়ে যাওয়া অপরাধ হয়, তবে কাল হয়তো থানার দিকে তাকানোই অপরাধ হয়ে যাবে।

ঘটনার পরপরই পুরো এলাকায় ক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে। মানুষ থানার গেট ঘিরে ফিসফিস করতে থাকে,এ কেমন আইন? জনগণের বন্ধু পুলিশ নাকি প্রতিপক্ষ?
অনেকে বলেন, এ ধরনের আচরণ শুধু অমানবিক নয়, পুলিশের ভাবমূর্তিকে কলঙ্কিত করছে।

একজন নারী চিৎকার করে বলেন, আমরা যদি থানায় গিয়ে ন্যায়বিচার না পাই, তাহলে কোথায় যাবো? থানাই যদি হয় আতঙ্কের ঘর, তবে সাধারণ মানুষের বাঁচার উপায় কোথায়?

এ বিষয়ে জানতে চাইলে হালুয়াঘাট থানার ওসি হাফিজুর ইসলাম হারুন সাংবাদিকদের প্রশ্ন এড়িয়ে গিয়ে শুধু বলেন, দু’জনকে গ্রেফতার করে আদালতে পাঠানো হয়েছে। আদালতে না পৌঁছানো পর্যন্ত কিছু বলা যাবে না।
তার এই গা-ছাড়া উত্তর জনতার ক্ষোভকে আরও উসকে দিয়েছে। স্থানীয়দের ভাষায়, ওসি যেন মানুষ নয়, ক্ষমতার অহংকারে অন্ধ এক শাসক।

মানবাধিকার সংগঠনগুলো বলছে, এই ঘটনা শুধু আইন নয়, মানবতারও চরম অবমাননা। কোনো নারীকে বিনা অপরাধে গ্রেফতার করা সরাসরি মানবাধিকার লঙ্ঘন। আইন রক্ষকরা যদি এভাবে আইন ভাঙেন, তবে দেশে সাধারণ মানুষ কোথায় যাবে?

স্থানীয়দের দাবি ওসি হাফিজুর ইসলাম হারুন ও সংশ্লিষ্ট পুলিশ সদস্যদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করা হোক। নিরপরাধ নারীকে গ্রেফতারের দায়ে জবাবদিহিতা নিশ্চিত করা হোক।থানাকে আতঙ্ক নয়, মানুষের আশ্রয়স্থল হিসেবে গড়ে তুলতে হবে।

হালুয়াঘাটের এই ঘটনার পর জনমনে একটাই প্রশ্ন, এটা কি আইন-শৃঙ্খলা রক্ষার নাম, নাকি ক্ষমতার দম্ভে মানুষের জীবন নিয়ে ছেলেখেলা?”


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *


ফেসবুকে আমরা