সোমবার, ১৩ অক্টোবর ২০২৫, ০২:০২ পূর্বাহ্ন
শিরোনামঃ
মিরপুর রিপোর্টার্স ক্লাবের বর্ষপূর্তি উদযাপনে সাংবাদিক নেতা খান সেলিম রহমানকে বিশেষ সম্মাননা প্রদান পল্লবী থানা এলাকায় টানা অভিযানে মাদক সাম্রাজ্যের পতন *লক্ষ্মীপুরে রুসুল গঞ্জ বহুমুখী উচ্চবিদ্যালয়ের শিক্ষার মান উন্নয়নে ব্যাপক উদ্যোগ* রাজশাহীতে দুটি ট্রাকের ১০ লক্ষ টাকার যন্ত্রাংশ চুরির অভিযোগ নীলফামারীতে ৫ দফা দাবিতে জামায়াতের স্মারকলিপি চাঁদাবাজ ও সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স ঘোষণা আমিনুল হকের ঢাকা-১৪ আসনে ধানের শীষে ভোট চেয়ে যুবদল নেতা সাজ্জাদুল মিরাজের বিশাল মিছিল ঝিনাইদহে সেনাবাহিনীর যৌথ অভিযান অস্ত্র উদ্ধার আটক ২ জন ঝিনাইদহের মহেশপুরে বিজিবির অভিযানে ভারতীয় মদ উদ্ধার ও পাঁচ বাংলাদেশি আটক করতোয়া নদীতে নিখোঁজের৩২ ঘন্টা পর হৃদয়ের লাশ উদ্ধারের

গলাচিপায় মাদকের আগ্রাসন: কিশোররা হারিয়ে যাচ্ছে অন্ধকারে

খন্দকার জলিল-স্টাফ রিপোর্টার

 

পটুয়াখালীর গলাচিপা আজ মাদকের ভয়াল ছোবলে নাজেহাল। দিন দিন এ অঞ্চলে ভয়াবহ আকার ধারণ করছে মাদক ব্যবসা ও সেবন। বিশেষ করে পৌরসভার বিভিন্ন পরিত্যক্ত ভবন সন্ধ্যা নামলেই রূপ নিচ্ছে ইয়াবা, গাঁজা ও নানা প্রকার নেশাজাত দ্রব্যের আস্তানায়। প্রশাসনের চোখের সামনে প্রকাশ্যে এই বেচাকেনা চললেও কার্যকর পদক্ষেপ না থাকায় আশঙ্কাজনক হারে বৃদ্ধি পাচ্ছে মাদকের বিস্তার।

 

স্থানীয়রা জানায়, এক পিচ ইয়াবার দাম দিতে হয় ২৫০ থেকে ৫০০ টাকা পর্যন্ত। নেশার কবলে একবার কেউ পড়ে গেলে আর বের হতে পারে না। তখন নেশার টাকা জোগাড় করতে গিয়ে বেছে নেয় অপরাধের পথ—বাটপারি, ধান্ধাবাজি, চুরি, ছিনতাই ও চাঁদাবাজি। ফলে ধ্বংসের দিকে ধাবিত হচ্ছে অগণিত তরুণ, যা সমাজে এক মহা সংকটের জন্ম দিচ্ছে।

 

অভিভাবকরা আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছেন—কখন তাদের সন্তানও এই ভয়াবহ ছোবলে জড়িয়ে পড়ে। মাদকের ছোবল এতটাই ভয়াবহ হয়ে উঠেছে যে, নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন জানান—গলাচিপায় মাদক সরবরাহে সবচেয়ে বড় ভূমিকা রাখছে কিছু প্রভাবশালী মহিলা। শহরের যে সব স্থানে মাদকের আড্ডা রয়েছে, সেসব এলাকার সচেতন মানুষ জানলেও মুখ খুলতে ভয় পান। কারণ, প্রতিবাদ করলেই তারা নানাভাবে হুমকি দেন। কথায় আছে—“চোরের মায়ের বড় গলা।” বাস্তবে সেটাই প্রমাণিত হচ্ছে গলাচিপায়।

 

তবে শুধু পৌরসভা নয়, শহরের আশপাশের ইউনিয়নেও ছড়িয়ে পড়েছে মাদকের ভয়াবহতা। সন্ধ্যা নামলেই স্কুল-মাদ্রাসার ভবন, হাটবাজার ও নির্জন স্থানে জমে ওঠে মাদকের আসর। স্কুল-কলেজপড়ুয়া কিশোররা পড়ালেখা ফাঁকি দিয়ে গোপনে গাঁজা ও ইয়াবার নেশায় মেতে ওঠে। মোবাইল ফোনে আড্ডা আর সুযোগ পেলে টেনে নেয় ভয়ংকর নেশার অন্ধকার জগতে।

 

একাধিকবার স্থানীয় ও জাতীয় পত্রিকায় সংবাদ প্রকাশিত হলেও প্রশাসন কার্যত কোনো কঠোর পদক্ষেপ নেয়নি। আশ্বাসের বাণী শোনা গেলেও বাস্তবে মাদক ব্যবসায়ী ও আস্তানাগুলোর বিরুদ্ধে অভিযান খুবই সীমিত। যার কারণে আরও দুর্ধর্ষ হয়ে উঠছে মাদক ব্যবসায়ীরা।

 

গলাচিপার ভদ্র সমাজ আজ প্রশ্ন তুলছে—কবে প্রশাসনের ঘুম ভাঙবে? কবে নামবে কঠোর অভিযানে? সময় থাকতে মাদক নিয়ন্ত্রণ না করলে অচিরেই এই জনপদ পরিণত হবে ভয়াবহ অরাজকতায়। যুব সমাজ ধ্বংস হলে অচিরেই সমাজব্যবস্থা ভেঙে পড়বে, হারিয়ে যাবে একটি প্রজন্মের ভবিষ্যৎ।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *


ফেসবুকে আমরা