বুধবার, ০৫ নভেম্বর ২০২৫, ১০:৫২ অপরাহ্ন
শিরোনামঃ
২৩৭ আসনে বিএনপির মনোনয়ন পেয়েছেন যারা। বেপরোয়া গতির ছোবলে ঝরলো কিশোর প্রাণ — শাহজাদপুরে মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় রোহানের মর্মান্তিক মৃত্যু ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা পুলিশের মাস্টার প্যারেড অনুষ্ঠিত ঝিনাইদহের কোটচাঁদপুরে শিক্ষক কো-অপারেটিভ ‘কালব’ অফিসের বিরুদ্ধে চেক জালিয়াতির অভিযোগ চুয়াডাঙ্গায় ডিএনসির অভিযানে দেড়শ পিচ ট্যাপেন্টাডল ট্যাবলেটসহ এক ব্যক্তি আটক মনপুরায় অবৈধ স-মিলের দৌরাত্ম্য বেড়েই চলেছে, পরিবেশ বিপর্যয়ের শঙ্কা স্থানীয়দের নবীনগরে মাদকের আধিপত্যকে কেন্দ্র করে দুই পক্ষের গোলাগুলিতে নিহত -১ গুলিবিদ্ধ – নীলফামারীতে পলিথিন বিরোধী অভিযান। ঝিনাইদহে সাইবার পুলিশের সাফল্য, শতাধিক মোবাইল ও প্রায় লাখ টাকা উদ্ধার বিশিষ্ট সমাজসেবক ও এসআইবিএল পরিচালক নার্গিস মান্নানের ৩য় মৃত্যুবার্ষিকী আজ

প্রথম দিনেই টাইফয়েড টিকা পেল ১০ লাখ শিশু

স্টাফ রিপোর্টার: সৈয়দ উসামা বিন শিহাব

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের উদ্যোগে সারাদেশে শুরু হলো জাতীয় টিকাদান কর্মসূচি — শিশুদের রোগ প্রতিরোধে ঐতিহাসিক পদক্ষেপ নেওয়া অত্যন্ত জরুরি।

দেশে প্রথমবারের মতো জাতীয়ভাবে টাইফয়েড প্রতিরোধে টিকাদান কর্মসূচির সূচনা হয়েছে। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের উদ্যোগে শুরু হওয়া এ কর্মসূচির প্রথম দিনেই সারা দেশে প্রায় ১০ লাখ শিশুকে টিকা প্রদান করা হয়েছে। সরকারের এই পদক্ষেপকে জনস্বাস্থ্য সুরক্ষার ক্ষেত্রে একটি গুরুত্বপূর্ণ মাইলফলক হিসেবে দেখা হচ্ছে।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের তত্ত্বাবধানে সকাল থেকে দেশের সব জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে একযোগে এই টিকাদান কার্যক্রম শুরু হয়। স্থানীয় স্বাস্থ্যকেন্দ্র, স্কুল, কমিউনিটি ক্লিনিক, মসজিদের আঙিনা ও বিভিন্ন পাবলিক স্থানে অস্থায়ী টিকাকেন্দ্র স্থাপন করা হয়। সকাল থেকেই শিশুদের নিয়ে অভিভাবকদের ভিড় লক্ষ্য করা যায়। সুশৃঙ্খলভাবে টিকা প্রদানের জন্য মাঠ পর্যায়ে স্বাস্থ্যকর্মী, স্বেচ্ছাসেবক ও স্থানীয় প্রশাসনের সহযোগিতায় বিশেষ টিম গঠন করা হয়।

৯ মাস থেকে ১৫ বছর বয়সী শিশুদের আওতায় আনতে হবে।এই টিকাদান কর্মসূচির আওতায় ৯ মাস থেকে ১৫ বছর বয়সী সব শিশু ধীরে ধীরে টিকার সুরক্ষা পাবে। প্রথম ধাপে শহর ও জেলা পর্যায়ে টিকা কার্যক্রম চালানো হচ্ছে। পরবর্তীতে এটি পর্যায়ক্রমে প্রত্যন্ত গ্রাম ও দুর্গম এলাকায়ও পৌঁছে দেওয়া হবে। কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, কোনো শিশুই যেন বাদ না যায়, সে জন্য হালনাগাদ তালিকা অনুযায়ী মাঠ পর্যায়ে কাজ চলছে।
টাইফয়েড একটি পানিবাহিত সংক্রামক রোগ যা দূষিত পানি ও খাবারের মাধ্যমে সহজে ছড়ায়। এটি শিশুদের মধ্যে দ্রুত সংক্রমণ ঘটিয়ে মারাত্মক জটিলতা তৈরি করতে পারে। প্রতিবছর দেশে বিপুল সংখ্যক শিশু টাইফয়েডে আক্রান্ত হয়। এ রোগে আক্রান্তদের চিকিৎসা ব্যয়ও অনেক বেশি। তাই এই টিকাদান কর্মসূচি শিশুদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধিতে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক বলেন, “টাইফয়েড প্রতিরোধে এ কর্মসূচি আমাদের জনস্বাস্থ্য সুরক্ষায় এক ঐতিহাসিক উদ্যোগ। প্রথম দিনেই ১০ লাখ শিশুকে টিকা দেওয়া হয়েছে। পর্যায়ক্রমে দেশের প্রতিটি শিশু এই সুরক্ষার আওতায় আসবে।” তিনি আরও জানান, প্রতিটি কেন্দ্রে যথাযথভাবে টিকা সংরক্ষণ, পরিবহন ও প্রয়োগের বিষয়টি নিশ্চিত করা হয়েছে। পাশাপাশি মাঠ পর্যায়ে পর্যাপ্ত স্বাস্থ্যকর্মী ও লজিস্টিক সহায়তাও নিশ্চিত করা হয়েছে।

টিকাদান কর্মসূচিকে সফল করতে দেশব্যাপী প্রচার-প্রচারণা চালানো হচ্ছে। টেলিভিশন, রেডিও, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ও স্থানীয় মসজিদের মাইক ব্যবহার করে অভিভাবকদের টিকাদানে অংশগ্রহণের আহ্বান জানানো হচ্ছে। অনেক এলাকায় স্কুল কর্তৃপক্ষ অভিভাবকদের আগেভাগেই জানিয়ে শিশুদের নিয়ে আসার ব্যবস্থা করেছে।
জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এই টিকাদান কর্মসূচি বাংলাদেশের স্বাস্থ্য খাতে এক নতুন দিগন্ত উন্মোচন করেছে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (WHO) এবং ইউনিসেফও এ উদ্যোগের প্রশংসা করেছে। তারা বলেছে, দক্ষিণ এশিয়ায় টাইফয়েড প্রতিরোধে বাংলাদেশের এ পদক্ষেপ অন্য দেশগুলোর জন্যও উদাহরণ হয়ে দাঁড়াবে।
বিভিন্ন কেন্দ্রে গিয়ে দেখা গেছে, সকাল থেকেই অভিভাবকরা সন্তানের স্বাস্থ্য সুরক্ষায় উৎসাহ নিয়ে উপস্থিত হচ্ছেন। অনেকেই বলেছেন, সরকারের এই উদ্যোগ তাদের মধ্যে আস্থা তৈরি করেছে এবং তারা চান প্রতিটি শিশু যেন এই টিকার আওতায় আসে।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *


ফেসবুকে আমরা