শনিবার, ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ১১:১৯ অপরাহ্ন
শিরোনামঃ
খুনের মামলার দুই আসামি গ্রেফতার রাজশাহী কেন্দ্রীয় কারাগারের কারা হাসপাতাল এখন রোল মডেল বরগুনা-১ আসনে নির্বাচনী প্রচার প্রচারণায় ব্যাস্ত এ্যাড. মোঃ রেজবুল কবির…! নবীনগরে পুকুর থেকে কলেজ ছাত্রীর লাশ উদ্বার আগামীতে শহীদ জিয়ার দল বিএনপিই সরকার গঠন করবে – জনসভায় এস এ সিদ্দিক সাজু শারদীয় দুর্গাপূজা উপলক্ষে গোপালপুরে আইন শৃঙ্খলা বিষয়ক মত বিনিময় সভা অনুষ্ঠিত গলাচিপায় নদী ভাঙনে সড়ক বিলীন হওয়ার শঙ্কায় মানববন্ধন বিজিএমইএ ও স্ট্যানলি স্টেলার বৈঠক: টেকসই উন্নয়ন ও সামাজিক দায়বদ্ধতায় অঙ্গীকার রাঙ্গাবালীতে দশ দিনব্যাপী আনসার-বিডিপি প্রশিক্ষণ চলছে বগুড়ায় মাদক ও আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে এএসপির সঙ্গে জাতীয় মানবাধিকার অ্যাসোসিয়েশনের আলোচনা

রাজশাহী দুর্গাপুরে খাদ্যগুদাম থেকে নিম্নমানের চাল উদ্ধার ৩ জনকে বদলির পর মামলা

দুর্গাপুর (রাজশাহী) প্রতিনিধিঃ

মোঃ ইসমাইল হোসেন নবী

রাজশাহী দুর্গাপুর উপজেলায় সরকারি খাদ্যবান্ধব কর্মসূচির জন্য সংরক্ষিত খাদ্য গুদাম থেকে – ১৭ /০৯/২০২৫ ইং এ পর্যন্ত নষ্ট ও নিম্নমানের ৮০ মেট্রিকটন চাল উদ্ধার করেছে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা  (ইউএনও) এঘটনায় খাদ্যগুদামের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসিএলএসডি) মোঃ রফিকুল ইসলাম সহ দুই প্রহরীকে বদলি করা হয়, এবং তাদের বিরুদ্ধে বিভাগীয় মামলার সুপারিশ করেছে সংশ্লিষ্ট বিভাগ।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সাবরিনা শারমিন জানান,  উপকারভোগীদের অভিযোগের পর, গত ২৬ আগস্ট নিজ উদ্যোগে খাদ্য গুদাম   পরিদর্শনে গিয়ে লালচে-তামাটে রঙের নষ্ট নিম্নমানের চাল সনাক্ত করা হয়,  তাৎক্ষণিক নষ্ট নিম্নমানের চাল অপসারণের নির্দেশ দেওয়া হয়, পরবর্তীতে উপজেলা প্রশাসন ও জেলা খাদ্য বিভাগ যৌথভাবে তদন্ত কমিটি গঠন করেন, তদন্তে নিম্নমানের খাওয়ার অনুপযোগী চাল পাওয়া যায়।

প্রশাসনের চোখ ফাঁকি দিতে খাদ্য পরিদর্শক ও ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোঃ রফিকুল ইসলাম অতি  গোপনে গত ২৮ আগস্ট  ১৩২ বস্তা নিন্মমানের চাল খাদ্য গুদাম থেকে সরিয়ে গুদামের নিরাপত্তা পহরি শাহজাহানের বাড়িতে লুকিয়ে রাখেন, সাংবাদিক মিডিয়া ও সাধারণ জনগণ এর মধ্যে লুকিয়ে রাখা চালের বিষয়টি জানাজানি হলে, গুদামের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোঃ রফিকুল ইসলাম চাল সঙ্গে সঙ্গে গুদামে পুনরায় ফেরত নিয়ে আসে, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ( ইউএনও) এর কাছে সাংবাদিক ইলেকট্রিক মিডিয়া এই বিষয়টি নিয়ে জানতে চাইলে, সঙ্গে সঙ্গে গুদামের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা রফিকুলকে তলব করেন, স্থানীয় সাংবাদিকদের সামনে  তিনি জানান তার সংশ্লিষ্ঠ দপ্তরের উর্ধতন কর্মকর্তার পরামর্শে দ্রুতই চাউলগুলো  স্থানান্তর করতে, ওই বাড়িতে রেখেছিলেন, স্বীকারোক্তির ভিডিও ফুটেজ ও অডিও রেকর্ড, চাউলের ভিডি সাংবাদিকদের নিকট সংরক্ষিত রয়েছে, চাল সরানোর ঘটনা সাংবাদিক মিডিয়া ও সাধারণ জনগণের  মধ্যে জানাজানি ও পাবলিস্ট হওয়ায়,  দ্রুত এব্যাপারে

জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক (ডিসি-ফুড) নির্দেশে  -১৭/০৯/২০২৫ তারিখে খাদ্যগুদাম কর্মকর্তা  মোঃ রফিকুল ইসলামকে সিরাজগঞ্জের কাজিপুরে, শাহজাহান ও বাবুল কুমারকে বগুড়ায় বদলি করা হয়।

উপজেলার  নওপাড়া ইউনিয়নের উপকারভোগী আক্কাছ আলী, সাংবাদিক ইলেকট্রিক মিডিয়ার সামনে যা বলেন,  আগে যে চাল পেতাম তা খাওয়ার মতো ছিল না,  তবে উপজেলা প্রশাসনের অভিযানের পর, এখন অনেক ভালো মানের চাল পাচ্ছি।

এদিকে সরকারি খাদ্য গুদামে নিম্নমানের চাল কীভাবে ঢুকল তা নিয়ে রহস্যের সৃষ্টি হয়েছে, দুর্গাপুর খাদ্য গুদামের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি-এলএসডি) রফিকুল ইসলামকে শোকজ করেছে জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক (ডিসি-ফুড)

দুর্গাপুর উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক (ইউসিএফ) ইয়াছিন আলী সরকারি খাদ্য গুদামে এসব নিম্নমানের চাল কীভাবে ঢুকল তা জানেন না বলে তদন্ত কমিটিকে বলেছেন, তিনি আরও জানিয়েছেন নিম্নমানের এসব চাল গুদামে কীভাবে এলো তা তিনি জানেন না, ভাল বলতে পারবেন গুদামে ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাই।

সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, খাওয়ার অনুপযোগী নিম্নমানের চালের উৎস্য অনুসন্ধান ও এসব চাল সরকারি গুদামে ঢুকানোর সঙ্গে জড়িতদের শনাক্তে ২৮ আগস্ট গঠিত তদন্ত কমিটির প্রধান করা হয়েছে, উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা জান্নাতুল ফেরদৌসকে।

কমিটির অপর দুই সদস্য হলেন উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মো. আল মামুন ও উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা এসএম শামীম আহাম্মেদ, তারা তদন্ত কার্যক্রম পরিচালনা করছেন।

তদন্ত কমিটির প্রধান উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা জান্নাতুল ফেরদৌস জানান, তদন্ত কার্যক্রম চলমান রয়েছে, আমরা ইতোমধ্যে খাদ্য গুদাম পরিদর্শন করেছি, কীভাবে এসব নিম্নমানের চাল গুদামে ঢুকল, তার নথিপত্র চেয়েছি গুদামের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তার কাছে, নথিপত্র পেলে বিষয়টি পরিষ্কার হবে, কারা এই নিম্নমানের চাল কোথায় থেকে এনে গুদামে ঢুকিয়েছে নির্ধারিত সময়ে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেওয়া হবে বলে জানান তিনি, উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রন কার্যালয়ের তথ্য মতে, ২০২৪-২০২৫ অর্থ বছরে ৪৪১.২৩৪ মেঃ টন ধান ক্রয় করা হয়, ধান হতে চাল উৎপাদনের জন্য আতাউর এন্টারপ্রাইজ’কে ২১৬.০০ মেঃ টন ধান দেওয়া হয়, এবং ধানের বিপরীতে ১৪০.৪০ মেঃ টন চাউল পাওয়া যায়, মাহফুজ চাল কল’কে  ১৮০.০০ মেঃ টন ধান দেওয়া হয় ধানের বিপরীতে ৭৮.০০ মেঃ টন চাল পাওয়া যায়, এছাড়া অবশিষ্ট ৪৫.৩২৪ মেঃটন ধান মজুদ রয়েছে, বর্তমানে খাদ্য গুদামে সর্বমোট ৪৬৮.২০৩ মেঃটন চাল, ১০০ মেঃ টন গম ৪৫.৩২৪  মেঃ টন ধান মজুদ রয়েছে।

ইউএনও’র কঠোর হস্তক্ষেপে টিসিবি ও খাদ্যবান্ধব কর্মসূচির মাধ্যমে বিতরণকৃত ভালো মানের চাল পেয়ে বর্তমানে উপকারভোগীরা বলেন, বিগত দিনে কখনো  এত ভালো মানসম্মত চাল টিসিবিতে আমরা কখনো দেখিনাই, সন্তুষ্ট  প্রকাশ করেছেন দুর্গাপুর উপজেলার সাধারণ জনগণ।

এব্যাপারে (ইউএনও) সাবরিনা শারমিন বলেন, এ পর্যন্ত ৮০ মেট্রিক টন নিম্নমানের চাল উদ্ধার হয়েছে, যার সরকারি মূল্য প্রায় ৪০ লাখ টাকা, তদন্ত কমিটির প্রতিবেদনের ভিত্তিতে জড়িত থাকা  অভিযুক্তদের ওপর প্রয়োজনীয় সর্বোচ্চ ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।

জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক কর্মকর্তা ওমর ফারুক বলেন, নিম্নমানের চাল উদ্ধারের বিষয়টি নিয়ে প্রতিবেদনের ভিত্তিতে অভিযুক্তদের বদলি করা হয় এবং তাদের বিরুদ্ধে বিভাগীয় মামলা রুজু করা হয়েছে,  চাল কেলেঙ্কারি সাথে জড়িতদের ছাড় পাওয়ার সুযোগ নেই।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *


ফেসবুকে আমরা