শনিবার, ২৫ অক্টোবর ২০২৫, ১১:৪৩ পূর্বাহ্ন
শিরোনামঃ
মিরপুরে গার্মেন্টসে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ড, দেড় ঘণ্টা পর নিয়ন্ত্রণে আগুন মিরপুরে ফুটপাত দখলমুক্ত করতে ওসি সাজ্জাদ হোসেন রোমনের নেতৃত্বে উচ্ছেদ অভিযান টাঙ্গাইলের গোপালপুরে কৃষকনেতা হাতেম আলী খানের স্মরণ সভা অনুষ্ঠিত। ইসকন নিষিদ্ধের দাবিতে মুক্তাগাছায় বিক্ষোভ সমাবেশ ও মিছিল অনুষ্ঠিত। গণঅভ্যুত্থানে অংশ নেয়া নতুন দলগুলো নিয়ে জোট হবে: এবি পার্টির চেয়ারম্যান মঞ্জু বিএনপি, খালেদা জিয়া ও তারেক রহমানের উপর আস্থা রাখুন: মহিলা সমাবেশে-সাইফুল ইসলাম ফিরোজ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বিশেষ সম্মাননা পেলেন শহিদুল ইসলাম (সোহেল) নতুন রাজনৈতিক ছত্রছায়ায় পুরনো মুখ – গণতন্ত্রের চেতনায় শঙ্কা বিএনপি নেতাদের দ্রুত আরোগ্য কামনায় মোহাম্মদপুরে শ্রমিক দলের দোয়া মাহফিল বিএনপির মনোনয়ন প্রত্যাশী আশরাফ হোসেন আলীমের ৩১দফা লিফলেট বিতরণ।

দুই প্রেম, এক হত্যার গল্প: জবি শিক্ষার্থী জোবায়েদকে বাঁচাতে নির্মম প্রেয়সীর ‘না’

স্টাফ রিপোর্টার: সৈয়দ উসামা বিন শিহাব

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) শিক্ষার্থী জোবায়েদ হোসেন (২৫) হত্যাকাণ্ডে এক ভয়ংকর প্রেমের ত্রিভুজের রহস্য উন্মোচিত হয়েছে। ভালোবাসা, প্রতারণা ও হিংসার মিশেলে গড়ে ওঠা এই গল্পের নেপথ্যে রয়েছেন তার টিউশন ছাত্রী ও প্রেমিকা বার্জিস শাবনাম বর্ষা (১৮) এবং বর্ষার আরেক প্রেমিক মাহির রহমান (১৯)। মৃত্যুর মুখে দাঁড়িয়েও প্রিয় মানুষের কাছে সাহায্য চেয়েছিলেন জোবায়েদ— কিন্তু সেই প্রেয়সীই নির্দয় কণ্ঠে বলেছিলেন, “তুমি না মরলে আমি মাহিরের হবো না।”
মঙ্গলবার দুপুরে রাজধানীর মিন্টো রোডের ডিএমপি মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত এক সংবাদ ব্রিফিংয়ে ঢাকা মহানগর পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার (ক্রাইম অ্যান্ড অপারেশনস) এস.এন. মো. নজরুল ইসলাম বলেন, “হত্যার ঘটনায় মূল পরিকল্পনাকারী বর্ষা ও মাহিরসহ তিনজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।”
পুলিশ জানায়, জোবায়েদ জবি’র পরিসংখ্যান বিভাগের ছাত্র ছিলেন এবং বংশাল এলাকায় টিউশনি করাতেন। সেই সূত্রেই বর্ষার সঙ্গে সম্পর্ক গড়ে ওঠে। কিন্তু বর্ষার আগে থেকেই মাহির রহমানের সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক ছিল। কারও মতে তা দেড় বছর, আবার কেউ বলেন প্রায় এক দশক ধরে চলছিল। দুই সম্পর্ক একসঙ্গে টিকিয়ে রাখতে গিয়ে বর্ষা পড়ে যান জটিলতায়।
ডিএমপির তথ্যমতে, মাহির সব জানার পর বর্ষা তাকে জানায়— “জোবায়েদকে না সরালে আমি তোমার কাছে ফিরতে পারব না।” এরপর থেকেই হত্যার পরিকল্পনা শুরু হয়। প্রায় এক মাস প্রস্তুতি নিয়ে ১৯ অক্টোবর বিকেলে তারা সেই পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করে।
ওইদিন বিকেল ৪টার দিকে জোবায়েদ টিউশন পড়াতে বর্ষার বাসায় গেলে মাহির ও তার বন্ধু ফারদিন আহমেদ আয়লান নিচে ওঁত পেতে থাকে। কথাকাটাকাটির একপর্যায়ে মাহির ছুরি দিয়ে জোবায়েদের গলায় আঘাত করে। গুরুতর আহত অবস্থায় জোবায়েদ সিঁড়ি বেয়ে ওপরে উঠে একাধিক দরজায় সাহায্য চাইলে কেউ এগিয়ে আসেনি। শেষে বর্ষার দরজায় গিয়ে শেষ আশ্রয় চাইলেও বর্ষা তাকে বাঁচাতে অস্বীকার করে। অতিরিক্ত রক্তক্ষরণে সেখানেই তার মৃত্যু হয়।
লালবাগ বিভাগের উপকমিশনার মল্লিক আহসান উদ্দিন সামি বলেন, “এটি শুধু হত্যাকাণ্ড নয়, নির্মমতার এক দৃষ্টান্ত। আহত জোবায়েদের শেষ আর্তনাদেও প্রতিক্রিয়া দেখায়নি তার প্রেয়সী।”
নিহত জোবায়েদের বড় ভাই এনায়েত হোসেন সৈকত মঙ্গলবার বেলা ১১টার দিকে বংশাল থানায় বর্ষা, মাহির, আয়লানসহ মোট আটজনের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা দায়ের করেছেন। থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রফিকুল ইসলাম জানিয়েছেন, গ্রেপ্তার তিনজনই প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে হত্যাকাণ্ডে সম্পৃক্ততার কথা স্বীকার করেছে।
দেশজুড়ে আলোচিত বরগুনার রিফাত-মিন্নি হত্যার ঘটনার মতোই, এই ঘটনাও প্রেমঘটিত দ্বন্দ্বের ভয়াবহ পরিণতি হিসেবে দেখা দিচ্ছে। সমাজে নৈতিকতা, সম্পর্কের দায়বদ্ধতা ও তরুণ প্রজন্মের মানসিকতা নিয়ে নতুন করে প্রশ্ন তুলেছে এই হত্যাকাণ্ড।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *


ফেসবুকে আমরা