মো:মিল্টন হোসেন বিশেষ প্রতিনিধি ঝিনাইদহে
আন্তর্জাতিক দুর্নীতি বিরোধী দিবস-২০২৫ উপলক্ষে আজ ৯ ডিসেম্বর, মঙ্গলবার জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে বিভিন্ন কর্মসূচির মধ্য দিয়ে দিবসটি পালিত হয়েছে। সকাল থেকে জেলা প্রশাসন চত্বরে গড়ে ওঠে দুর্নীতিবিরোধী শপথ, সচেতনতামূলক আলোচনা এবং মানববন্ধনসহ নানান আয়োজন।
সকালে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সামনে “দুর্নীতির বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ হই, সুশাসন প্রতিষ্ঠায় সকলে সোচ্চার হই” এই স্লোগান নিয়ে মানববন্ধনে অংশ নেন সরকারি কর্মকর্তা, শিক্ষক, সাংবাদিক, কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী, সুশীল সমাজের প্রতিনিধিসহ বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ। মানববন্ধনে অংশগ্রহণকারীরা বলেন, দুর্নীতি একটি রাষ্ট্র ও সমাজকে ভেতর থেকে ধ্বংস করে দেয়। এর বিরুদ্ধে সামাজিক আন্দোলন গড়ে তুলতে হবে।
পরে জেলা প্রশাসকের সভাপতিত্বে জেলা প্রশাসন মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত হয় আলোচনা সভা। সভায় প্রধান আলোচকরা বলেন—
দুর্নীতি প্রতিরোধ শুধু আইন দিয়ে সম্ভব নয়, প্রয়োজন জনসচেতনতা, মূল্যবোধ ও সততার চর্চা। পরিবার, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, কর্মস্থল—সব জায়গায় দুর্নীতিকে ‘না’ বলার মানসিকতা গড়ে তুলতে হবে। বক্তারা প্রশাসনের স্বচ্ছতা, ডিজিটাল সেবা, সুশাসন, জবাবদিহিতা এবং নাগরিক অধিকার নিশ্চিতের বিষয়েও গুরুত্ব আরোপ করেন।
জেলা প্রশাসক তার বক্তব্যে বলেন,
“ঝিনাইদহ জেলা প্রশাসন দুর্নীতির বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স নীতি অনুসরণ করছে। প্রশাসনের সব সেবার ক্ষেত্রে স্বচ্ছতা নিশ্চিতের পাশাপাশি জনগণের অভিযোগ গ্রহণে আমরা সর্বদা প্রস্তুত। দুর্নীতিমুক্ত বাংলাদেশ গড়তে সরকারি-বেসরকারি সব প্রতিষ্ঠানে সততার চর্চা আরও জোরদার করতে হবে।”
আলোচনা সভায় দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)–এর জেলা সমন্বয়কারীরাও বক্তব্য দেন। তারা দুর্নীতির ঝুঁকি কমাতে বিভিন্ন প্রতিরোধমূলক উদ্যোগ, ‘ইন্টিগ্রিটি ক্লাব’ কার্যক্রম এবং তরুণ প্রজন্মকে সচেতন করার পরিকল্পনা তুলে ধরেন।
অনুষ্ঠান শেষে অংশগ্রহণকারীরা দুর্নীতিবিরোধী শপথ পাঠ করেন এবং সচেতনতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে লিফলেট বিতরণ করা হয়।
দিবসটি ঘিরে জেলা প্রশাসন সারাদিন জুড়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে সচেতনতামূলক বার্তা প্রচার করে। জেলা শহরে ব্যানার, পোস্টার ও ফেস্টুনে সাজানো হয় বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠান।
অংশগ্রহণকারীদের বক্তব্য ও উদ্যোগে পরিষ্কার—ঝিনাইদহের মানুষ সুশাসন, জবাবদিহিতা ও দুর্নীতিমুক্ত সমাজ গঠনে আরও শক্তিশালী ভূমিকা রাখতে চান। এজন্য প্রশাসনের পাশাপাশি নাগরিকদের সচেতন ভূমিকা বড় ভূমিকা রাখবে বলে সবাই মনে করেন।