খন্দকার জলিল, স্টাফ রিপোর্টার
পটুয়াখালীর গলাচিপা উপজেলার পানপট্টি ও সদর ইউনিয়নের সংযোগকারী সেতুটি দীর্ঘদিন ধরে অযত্নে পড়ে থেকে এখন মারাত্মকভাবে ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে উঠেছে। ওই সেতুর সংস্কার ও পুনর্নির্মাণের দাবিতে স্থানীয় বাসিন্দারা মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করেছেন।
শুক্রবার (১০ অক্টোবর) সকাল ১০টার দিকে উপজেলার মুরাদনগর ব্রীজবাজার এলাকায় এ মানববন্ধনের আয়োজন করা হয়। এতে পানপট্টি ও সদর ইউনিয়নের শতাধিক মানুষ অংশ নেন।
মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, বছরের পর বছর ধরে কোনো সংস্কার না হওয়ায় সেতুর মাঝখান ধসে গেছে। এখন এটি কার্যত চলাচলের অযোগ্য হয়ে পড়েছে। প্রতিদিন শত শত মানুষ, শিক্ষার্থী ও রোগী প্রাণের ঝুঁকি নিয়ে যাতায়াত করছে। যেকোনো সময় ভয়াবহ দুর্ঘটনা ঘটতে পারে বলেও তারা আশঙ্কা প্রকাশ করেন।
এ সময় বক্তব্য রাখেন উপজেলা বিএনপির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মো. মাসুম বিল্লাহ, প্রভাষক মো. নাসির উদ্দিন, প্রভাষক মো. হারুন অর রশিদ, মানবাধিকার সম্পাদক মো. আব্বাস হাওলাদার, স্বেচ্ছাসেবক দলের আহ্বায়ক মো. আলী জিন্নাহ, সদর ইউনিয়ন বিএনপি সভাপতি মো. নাসির উদ্দিন মিয়াসহ আরও অনেকে।
বক্তারা বলেন, পানপট্টি ও সদর ইউনিয়নের যোগাযোগের একমাত্র মাধ্যম এই সেতুটি। দীর্ঘদিন সংস্কার না হওয়ায় এবং ভারী যানবাহনের চাপের কারণে সেতুটি ভেঙে পড়ে এখন প্রায় চলাচল বন্ধ হয়ে গেছে। এতে দুই ইউনিয়নের সাধারণ মানুষ চরম দুর্ভোগে পড়েছেন।
পানপট্টি ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান ও বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. সিদ্দিকুর রহমান বলেন, “আমার সময়ে স্থানীয় সহায়তায় সেতুটি নির্মাণ করা হয়েছিল। কিন্তু পরে কোনো রক্ষণাবেক্ষণ না হওয়ায় এটি পুরোপুরি ভেঙে পড়েছে। মানুষ এখন জীবনের ঝুঁকি নিয়ে পারাপার করছে।”
স্কুলগামী শিক্ষার্থীরা জানায়, “প্রতিদিন এই সেতু দিয়েই আমাদের স্কুলে যেতে হয়। মাঝের ভাঙা অংশ পার হতে ভয় লাগে। দ্রুত সংস্কার না হলে বড় দুর্ঘটনা ঘটতে পারে।”
এ বিষয়ে উপজেলা এলজিইডির নির্বাহী প্রকৌশলী মো. জাহাঙ্গীর আলম বলেন, “সেতুটি পুনর্নির্মাণের প্রস্তাব ইতোমধ্যে পাঠানো হয়েছে। শিগগিরই সংস্কারের কাজ শুরু হবে।”
স্থানীয়দের অভিযোগ, প্রায় ২০০৭ সালের দিকে নিম্নমানের উপকরণ ব্যবহার করে সেতুটি নির্মাণ করা হয়েছিল। পরবর্তী সময়ে কোনো সংস্কার না হওয়ায় এবং অতিরিক্ত যান চলাচলের কারণে এটি এখন সম্পূর্ণ ধসে পড়েছে। ফলে দুই ইউনিয়নের সরাসরি যোগাযোগ প্রায় বন্ধ হয়ে গেছে।
এলাকাবাসী বলেন, “এই গুরুত্বপূর্ণ সেতুটি দ্রুত সংস্কার না করলে কৃষক, শিক্ষার্থী ও রোগী সবাই চরম ভোগান্তিতে পড়বে।” তারা সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে দ্রুত কার্যকর উদ্যোগ নেওয়ার আহ্বান জানান।